মহাবিশ্বের বয়স

Capture

সূধী পাঠক কোন বস্তু  বা প্রাণীর বয়স হল তার জন্মের পর থেকে জিজ্ঞাসিত সময় পর্যন্ত অতিক্রান্ত সময়। এটি একটি পরিমাপের বিষয়। আর যে কোন পরিমাপের জন্যে আমাদের প্রয়োজন একটি আদর্শ মাপণ যন্ত্র বা তুলনার কাঠামো। এ ক্ষেত্রে চন্দ্র, সূর্য, নক্ষত্র, মাপকাঠি,সবশেষে ঘরি ইত্যাদি হল আমাদের সেই তুলনার কাঠামো। সময় সৃষ্টির পর থেকেই তার প্রধান বৈশিষ্ট হল সে চলমান। আমরা বিভিন্ন কাঠামোর তুলনায় তাকে পরিমাপ করতে পারি,আর সেই কারণেই সময় আপেক্ষিক অর্থাৎ বিভিন্ন  কাঠামোর সাপেক্ষে এর বিস্তার বিভিন্ন রকমের। আমরা সাধারনতঃ আমাদের পৃথিবীর সাপেক্ষে এর পরিমাপ করে থাকি। এ প্রসঙ্গে একটা বিষয় প্রণিধান যোগ্য যে,সময়ের নিশ্চই একটা প্রকৃত গতি রয়েছে? সেটি কি ও কত? যদি বলা হয় সময় যেহেতু মহাবিশ্বের উৎপত্তি কাল থেকে শুরু ফলে মহাবিশ্বের গতি প্রকৃতি থেকে সময়ের গতি বিচার্য; তাহলে বিষয়টি অযৌক্তিক হবেনা। আমরা বিজ্ঞানের আপেক্ষিতা সূত্র থেকে জানি,সময় পরিমাপের স্থানে পদার্থভর যত বেশী হবে সময়ের গতি ও সেই অনুপাতে কমে যাবে,এর অর্থ এই নয় যে সময়ের প্রকৃত গতি কমে যাবে; মূলতঃ তার পরিমাপকৃত আপেক্ষিক গতির মান কমে যাবে;তার কারণ মধ্যাকর্ষণ বলের প্রভাবে মাপন যন্ত্রের ধীরগতির কারণে এই পার্থক্য দেখা দেয়। মুসলিম ধারনা মতে স্বর্গ, নরক উভয়েই আমাদের পৃথিবীর তুলনায় অনেক বড় তথা বেশী ভর সম্পন্ন কিন’ তারা আল্লাহ্‌র আরশ থেকে অনেক ছোট। অতএব স্বর্গ / নরকে সময়ের গতি পৃথিবীর তুলনায় ধীর; তাহলে বলা যায় সেখানকার পরিমাপকৃত একক সময়ের পরিধি পৃথিবীর তুলনায় বড়। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআন বলছে, স্বর্গ / নরকের একদিন পৃথিবীর ১০০০ বছরের সমান। সূরা হজ্জের ৪৭ নং আয়াতে মহান আল্লাহ বলছেন, وَيَسْتَعْجِلُونَكَ بِالْعَذَابِ وَلَن يُخْلِفَ اللَّهُ وَعْدَهُ وَإِنَّ يَوْمًا عِندَ رَبِّكَ كَأَلْفِ سَنَةٍ مِّمَّا تَعُدُّونَ ২২:৪৭ তারা আপনাকে আযাব ত্বরান্বিত করতে বলে অথচ আল্লাহ কখনও তাঁর ওয়াদা ভঙ্গ করেননা। আপনার পালনকর্তার কাছে একদনি তোমাদের গণনার এক হাজার বছরের  সমান। এখানে মহাবিক্রম আল্লাহ্‌ বলছেন,অবিশ্বাসীদের শাস্তির সময়কালের একদিন পৃথিবীর হাজার বছরের সমান। সুতরাং কোরআন অনুযায়ী পৃথিবীর সময় নরকের সময়ের চেয়ে দ্রুত চলে। বিজ্ঞানও একই কথা বলছে -অধিক ভরসম্পন্ন বস্তুএত সময় ধীরগতিতে চলে। তাই অধিক ভর সম্পন্ন স্বর্গ ও নরকে সময় পৃথিবীর তুলনায় অত্যান্ত ধীর গতি সম্পন্ন হওয়াই স্বাভাবিক। বিজ্ঞানের ধারনামতে আমাদের সৌর জগৎ ৪.৫৬৭শত কোটি বছরের পুরানো অর্থাৎ আমাদের পৃথিবী এই সময় পূর্বে তার প্রতিবেশী গ্রহ সদস্যদের সাথে সমবেত হয়ে তার জীবনচক্র শুরু করে। তাছাড়া আমাদের মহাবিশ্বের বয়ঃসীমা ধরা হয় ১৩.৭±০.২ শত কোটি বছর। ফলে দেখা যাচ্ছে আমাদের পৃথিবীর বয়স মহাবিশ্বের বয়সের এক তৃতীয়াংশ (৪.৫৬৭ bln/১৩.৭ bln = ১/৩)। কোরানিক ধারনামতেও ঠিক তাই। মহান আল্লাহ ৪১:৯ আয়াতে যে ধারনা দিয়েছেন তা হল,মহাবিশ্বের সামগ্রিক বয়স যেখানে ৬ দিন সেখানে আমাদের পৃথিবীর বয়স ২দিন। তাহলে দেখাযাচ্ছে মহাবিশ্বের তুলনায় আমাদের পৃথিবী (২/৬ = ১/৩) তিন ভাগের এক ভাগ পুরানো। সূরা আল আ’রাফে আল্লাহ্‌ বলছেন, ৭:৫৪ নিশ্চই তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ। তিনি নভোমণ্ডল ও ভূমন্ডলকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। তঃপর আরশের উপর অধিষ্ঠিত হয়েছেন। তনি পরিয়ে দেন রাতের উপর দিনকে এমতাবস্তায় যে দিন দৌড়ে রাতের পিছনে আসে। তিনি সৃষ্টি কেরেছন চন্দ্র সূর্য ও নক্ষত্র দৌড় স্বীয় আদেশের অনুগামী। শুনে রেখ তাঁরই কাজ সৃষ্টি করা এবং আদেশ দান করা। আল্লাহ বরকতময় যিনি যনি বিশ্বজগতরে প্রতপিালক। সূধী পাঠক এখানে একটি বিতর্কিত বিষয় রয়েছে,তাহল ‘ছয় দিবস’ অবিশ্বাসীরা বলছেন, পৃথিবীর ছয় দিনকে বুঝানো হয়েছে। একটু ভাল করে লক্ষ্য করুন,পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ্‌‌ যখন পৃথিবীর দিন সম্পর্কে কিছু বলেছেন তখন তিনি ‘তোমাদের’  বলে উল্লেখ করেছেন। মহাবিশ্ব সৃষ্টি প্রাসঙ্গিক আয়াত গুলিতে তোমাদের দিবস বলে উল্লেখ নেই। এখানে পরিস্কার ভাবেই বুঝা যাচ্ছে এই দিবস মহান আল্লাহ্‌র দিবস। তাছাড়াও যখন পৃথিবী সমেত  এই মহাবিশ্ব সৃষ্টিই হয়নি  শুধু আল্লাহ্‌র আরশ ছাড়া অন্য কিছুর অস্তিত্বই ছিলনা,তখন সৃষ্টিকর্মে  ব্যায়িত সময়কে পৃথিবীর সময় বলে উল্লেখ করার কোন কারণ থাকেনা। এই বিতর্কের সুবাধে অনেকেই মনে করে থাকেন যে উক্ত ছয় দিন  মহাবিশ্ব সৃষ্টির প্রারম্ভিক ৬ দিন। না! সূধী পাঠক এই ৬ দিন প্রারম্ভিক ছয় দিন নয়। যেহেতু এই সময়ের শুরু হয়েছে আল্লাহ্‌র আরশ থেকে এই সাপেক্ষ কাঠামো শুধুমাত্র আল্লাহ্‌র আরশ, পৃথিবী বা অন্য কিছু নয়, সুতরাং ‌এই সময় আল্লাহ্‌ আরশের সময়। লক্ষ্য করুন আয়াত ৫০:৩৮ সেখানে পরিস্কার ভাবেই বলা হয়েছে  ফলে এ ক্ষেত্রে যৌক্তিক বিতর্কের কোন সুযোগ নেই। সূরা হা’মীম এর ৯ নং আয়াতে আল্লাহ্‌ বলছেন, قُلْ أَئِنَّكُمْ لَتَكْفُرُونَ بِالَّذِي خَلَقَ الْأَرْضَ فِي يَوْمَيْنِ وَتَجْعَلُونَ لَهُ أَندَادًا ذَلِكَ رَبُّ الْعَالَمِينَ ৪১:৯ (আল্লাহ তাঁর নবীকে বলছেন) ‘বল,তোমরা কি তাহাকে অবিশ্বাস করিতেছ যিনি দুই সময় কালের মধ্যে পৃথিবী সৃষ্টি করিয়াছেন? তোমরা তাঁহার সাথে অন্যকে শরীক করিতেছ? তিনিইতো বহু জগতের প্রতিপালক প্রভু। وَلَقَدْ خَلَقْنَا السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ وَمَا مَسَّنَا مِن لُّغُوبٍ ৫০:৩৮ আমি নেভোমণ্ডল ও ভূমন্ডল ও এতদুভয়রে মধ্যবর্তী সবকছিু ছয়দনি সৃষ্টি করেছেন এবং আমাক কোনরূপ ক্লন্তি পর্শ করেনি। [Quran 7.54] And your Lord, Allah, who created the Heavens and the Earth in six days and then settled on the Throne… Those six days are on the Throne; so the frame of reference for creation is the Throne, not Earth. [Quran 41.9] Say: “Is it that you deny Him [Allah] who created the Earth in two days? And you claim others to be equal to Him? He is the Lord of (all) the Worlds.” [Quran 50.38] And we have created the Heavens and Earth and EVERYTHING IN BETWEEN in six days and We were not touched by fatigue. মহান আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন আকাশ পৃথিবী ও তন্মধ্যে যা কিছু আছে সবই,আর তা করেছেন ছয় দিনে। এই “‌যা কিছু” কথার ব্যাপ্তি ভেবে দেখুন,এখানে পরিস্কার ভাবেই আল্লাহ্‌ ঘোষণা করছেন, মহাবিশ্বে যা কিছু আছে-এর মধ্যে তার সৃষ্টি জগতের সবকিছুই আছে। বিশেষ করে পৃথিবী সৃষ্টিকে যেভাবে তিঁনি বিশেষায়িত করেছেন সেক্ষেত্রে পৃথিবীর এই প্রাণী জগৎ এই ‘যা কিছু” থেকে বাদ পড়তে পারেনা।   লক্ষ্য করুন সূরা আম্বিয়ার ৩০ নং আয়াতটি, أَوَلَمْ يَرَ الَّذِينَ كَفَرُوا أَنَّ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضَ كَانَتَا رَتْقًا فَفَتَقْنَاهُمَا وَجَعَلْنَا مِنَ الْمَاء كُلَّ شَيْءٍ حَيٍّ أَفَلَا يُؤْمِنُونَ ২১:৩০ “অবিশ্বাসীরা কি লক্ষ্য করেনা য,আকাশমণ্ডলী এ পৃথিবী একত্রে মিলিত ছিল,পরে আমরা তাহাদিগকে পৃথক করিয়াছি;আমি পানিতে ব্যাবস্থিত করিয়াছি সকল জীবনের উৎস-তবু কি উহারা বিশ্বাস করিবেনা?” এই যে বর্ণনার সম্মিলিত প্রয়াস,এ কি ‘সব কিছু” থেকে প্রাণী জগৎকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা! এই প্রয়াস ভাবুকদেরকে পরিস্কার ভাবে বুঝিয়ে দেওয়ার প্রয়াস; ‘সব কিছুর’ মধ্যে আল্লাহ্‌র সমগ্র সৃষ্টি জগৎ রয়েছে। তা’হলে কি করে বলবেন যে ঐ ৬ দিন শুধুমাত্র প্রারম্ভিকতার সময়। অসীম দয়ালু স্রষ্টা ভুল বুঝাবার চেষ্ঠা করেননি, ভুল বুঝার অবকাশও রাখেননি, তাইতো তিনি এই জটীল বিষয় গুলো বুঝে নেওয়ার ও বুঝিয়ে দেওয়ার দ্বায়িত্ব দিয়েছেন ভাবুক সম্প্রদায়কে। শুধু তাই নয় এই দ্বায়িত্বের জবাবদিহিতাও রয়েছে। বিজ্ঞানীগণ না হয় একবাক্যে ব্যক্ত করে ফেলবেন যে তারা সত্যানুসন্ধানী; কিন্তু আমরা অধমরা কি দিয়ে পার হব। তাইতো দয়াময়ের কাছে আকুল মিনতি তিনি যেন সামান্য হলেও সুযোগ দেন। আর আবেগ তারিত আলোচনা নয়, ফিরে আসি মূল আলোচনায়- আল্লাহ্‌র আরশের সময়ে মহাবিশ্বের সবকিছু যখন ছয় দিনের পুরোনো তখন আমাদের পৃথিবীর বয়স মাত্র দুই দিন। আর এতেই পরিস্কার বিবৃত হয়ে আছে আজকের বিজ্ঞানের চমকপ্রদ আবিস্কার যে, পৃথিবীর বয়স মহাবিশ্বের বয়সের এক তৃতীয়াংশ। অনুরূপ ভাবে পৃথিবীর সময়ে তার নিজের বয়স ৪.৫৬৭ শত কোটি বছর যেখানে মহাবিশ্বের বয়স একই মাপে ১৩.৭ বিলিয়ন। তাদের অনুপাত ৪.৫৬৭/১৩.৭=১/৩। আর মহাবিশ্ব সৃষ্টিতে আল্লাহ্‌র আরশের সময়ের অনুপাতও ২/৬=১/৩ অর্থাৎ দু’টি অনুপাত পরস্পর সমান। সুধী পাঠক একে কি বলবেন, শুধুই কি কাকতালীয়, নাকি বলবেন চৌদ্দশত বছর আগেকার কোন বুদ্ধিমান মানুষের লেখা উপন্যাস। এ ভার আপনাদের বিবেকের উপর রইল। অতীব দুঃখের বিষয় এর পরেও অবিশ্বাসীরা এমনকি দোদোল্যমান বিশ্বাসীরাও চোখে দেখে,বুঝেশুনেও বলে থাকে,এ কিতাব এক অতিসাধারণ মরুচারীর লেখা। সময়ের আপেক্ষিতার সাধারণ সূত্র ব্যাখ্যা করে কেন আল্লাহ্‌র আরশের সময় পৃথিবীর সময়ের তুলনায় এত ধীর। শুধু তাই নয় এই সূত্র আরও ব্যাখ্যা করে আল্লাহর আরশের অতিক্রান্ত ছয় দিন কেন আমাদের সময়ের ১৩.৭শত কোটি বছর। আর এই হিসেবে আল্লাহ্‌র এক দিন আমাদের ২.২৮ শত কোটি বছরের সমান। সুতরা পবিত্র কোরআন অনুযায়ী, আল্লাহর আরশ > স্বর্গ/নরক> পৃথিবী আমরা জানি সময় আপেক্ষিক; একই পর্যবেক্ষক মহাবিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে মহাবিশ্বেরই বয়স পর্যবেক্ষন করলে বিভিন্ন রকমের হিসেব পাবে মধ্যাকর্ষনের বিভিন্নতার জন্যে। ফলে কোন পর্যবেক্ষ পৃথিবীর সময়ের হিসেবে মহাবিশ্বের বয়স ৩ কোটি হিসেব করলে পৃথিবীর বয়স হবে এক কোটি,একই লোক অন্য কোন নক্ষত্রে বসে হিসেব করলে তার সময়ের পরিসর হবে ভিন্ন। পবিত্র কোরআন তাই সময়ের পরিসরে না বলে বলেছে আনুপাতিক হারে; তা হল ১/৩ অনুপাত। আর এই অনুপাত সকল পর্যবেক্ষকের জন্য একই,যেখানেই তার অবস’ান হোক না কেন। এটাই হল পবিত্র কোরআনের ভিজ্ঞতা। এই প্রকাশ ভঙিই প্রমান করে যে, কোরআন কোন সাধারণ অভিধা থেকে বর্ণিত হয়নি, এটি কোন মহাবিজ্ঞ অতিমানুসিক রচনা। তাইতো কোরআন ৩২:৫ আয়াতে সময়ের সাপেক্ষে দূরত্বের বর্ণনা করেছে, যা ফিরিশতাদের দ্রুতির ইঙ্গিত দেয়; আর তা থেকে আমরা আলোর গতি খুঁজে পাই। আবার আয়াত ২২:৪৭ ও ৭০:৪ সময়ের সাথে সময়ের(দূরত্বের নয়) তুলনা করেছে যাকে বলা হয় সময়ের বিস্তৃতি(ঃরসব ফরষধঃরড়হ)। এখানে২২:৪৭ পৃথিবীর সময়ের সাথে স্বর্গ(১ দিনের সাথে ১ হাজার বছরের তুলনা)ও নরকের সময়ের তুলনা করা হয়েছে আর ৭০:৪ বর্ণনা করেছে পৃথিবী ও মহাজাগতিক সুড়ঙ্গের সাথে তুলনা(১দিন ৫০হাজার বছরের সমান)। সূধী পাঠক,১৪০০ বছর আগে কোরআন বলেছে, স্বর্গ/নরকের একদিন=পৃথিবীর ১০০০ বছর,আবার বলেছে,ফেরেশ্‌তারা আল্লাহ্‌র নির্দেশ নিয়ে আসে একদিনে যা ১০,০০০বছরের সমান। এই যে পৃথিবীর এক দিনের স্বাপেক্ষে বিভিন্ন পরিসরের সময়ের বর্ণনা দেওয়া হল তা থেকে একবারও কি কারো মনে প্রশ্ন জাগলনা,কেন এমনটা বলা হয়েছে? এখানে কি সময়ের আপেক্ষিকতা লুকিয়ে থাকতে পারেনা?। হয়তোবা বলবেন,সে যুগের মানুষ আপেক্ষিকতার সাথে পরিচিত ছিলেননা। সময়ের আপেক্ষিকতার ধারনা এসেছে হালে! বিজ্ঞান তার মেধা ও অভিধা দিয়ে যখন বললো সময় আপেক্ষিক,তখন পবিত্র কোরআনের পাতা বের করে বলা হল এইতো এখানে সে কথা বলা রয়েছে! বড়ই পরিতাপের বিষয় যে, কোরআন গবেষকগণ অনেক পিছনে পড়ে গেলেন। কেন এমনটা হল, কেনইবা আজ জোর করে বলতে হচ্ছে বিজ্ঞান কোরআনের আয়াতকে অনুমোদন দিচ্ছে। হয়তোবা আমাদের সূফী গবেষকগন কোরআনের পাতায় শুধু ধর্মীয় অনুশাসণের বাণী খুঁজেছেন,কোরআন গবেষণার বিষয় বস্তু নয়, এখানে মহান আল্লাহ্‌ তাঁর প্রিয় বান্দাদের ভয় দেখিয়েছেন আর বেহেশতের  লোভ দেখিয়েছেন। সূধী পাঠক, কসম সেই মহান প্রভুর যিঁনি পবিত্র কোরআনকে ভয় দেখাবার হাতিয়ার হিসেবে অবতীর্ণ করেননি, তিঁনি এই মহান গ্রন্থটিকে বিজ্ঞানের সূঁতিকাঘার রূপে অবতীর্ণ করেছেন,ভাবুক সম্প্রদায়কে বার বার আহ্বান করেছেন ভেবে দেখবার জন্যে। জানিনা বিজ্ঞানী আইনষ্টাইন কোরআন পড়েছিলেন কিনা,তবে তিনি যে নিজের অজান্তেই দয়াময়ের সেই আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন তাতে কোন সন্দেহ নেই! তার চিন্তভাবনার মধ্য দিয়ে আজ কোরআনের সেই মহাবাণী প্রাণ পেয়েছে,যেখানে বলা হয়েছে সময় আপেক্ষিক। কোরআনের পাতায় পাতায় বিজ্ঞানের শতধারা নিরন্তর প্রবাহিত হয়ে চলেছে, আমাদেরকে শুধু খুঁজে নিতে হবে, একথা বলা যাবেনা যে,‘আকাশ নিয়ে গবেষণা কোরআন অনুমোদন করেনা’ (মা’রেফুল কোরআন দষ্টব্য)। পবিত্র কোরআন তার নিজ মহিমায় হয়ে উঠেছে অলৌকিক গ্রন্থ,এতে মানবিক চিন্তা ধারার কোন সংমিশ্রণ ঘটেনি; এর ভাবগাম্ভীর্যতা ও প্রকাশ ভঙ্গিই তা প্রমান করে। বিজ্ঞানের জন্ম লগ্নে খোদ বিজ্ঞানেরই বন্ধ দুয়ার খুলে দিয়েছে এই কোরআন। এর পাতায় পাতায় বর্ণিত হয়েছে বিজ্ঞানের নানা তথ্য ও তত্ত্ব। বাণীর আবরণে আটকে আছে সব,আমাদেরকে শুধু খুঁজে বের করতে হবে।

m~Î-www.speed-light.info

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান