পবিত্র কোরআনের অলৌকিকতা প্রমানে ‘ক্কাফ’ অক্ষরটিই যথেষ্ট

সূধী পাঠক,পবিত্র কোরআন দয়াময় আল্লাহর এক অপূর্ব দান,একে আমরা মানুষের একমাত্র জীবন বিধান হিসেবে জানি,আর এও জানি প্রবিত্র কোরআন থেকেই; কিন্তু জানিনা কোরআনের এই দাবীটুকু কতটা যৌক্তিক।আমরা আরও জানি পৃথিবীতে বহু জাতি ও ধর্মমত রয়েছে। এখন প্রশ্ন হল,কোরআন কেন এই দাবী সার্বজনীন ভাবে করল? আবার সার্বজণীন দাবী কে করতে পারে? আমাদের দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তরে হয়তো যৌক্তিকভাবে  বলা চলে যে,এ অধিকার তাঁরই রয়েছে যিনি সার্বজনীন স্রষ্টা; একমাত্র তিনিই একথা বলার অধিকার রাখেন।আাবার একথাও বলাচলে,পৃথিবীর প্রায় সকল ধর্ম মতেরর লোকেরাই স্রষ্টার অস্তিত্বে বিশ্বাস করেন।এখন প্রথম প্রশ্নের জবাবে যদি বলা হয় পবিত্র কোরআন সেই সার্বজনীন স্রষ্টার প্রেরিত বাণী; তবে এই সার্বজনীনতা অর্জনের জন্য এই জবাব প্রমাণের দাবী রাখে।যদি বলা হয় কোরআনের বাণী নিজেই সেই অলৌকিকতার দাবী রাখে; তবে তা যুক্তির কাছে হারমানে; কারণ কোরআনের বাণীবদ্ধ মর্মকথা যে পৃথিবীর সকল দর্শনকেই ছাড়িয়ে গেছে তা কিন্তু নয়।পাশাপাশি এও বলা চলে যে,পবিত্র কোরআন অতি সরল দর্শনের উপর প্রতিষ্ঠিত যার ফলে এই গ্রন্থ অতিমাত্রায় সহজবোধ্য।তাহলে মানবদক্ষতা ও পারদর্শীতাকে দূরে ঠেলে পবিত্র কোরআনকে অলৌকি প্রমান করার পথ কোথায়? গত ১৪০০ বছর ধরে মহান গবেষকরা এই পথটিকেই খুঁজে ফিরেছেন; আর সেই সুবাধে তার্কিক গবেষকরা কোরআনকে নবী মোহাম্মদ (সাঃ) এর রচিত গ্রন্থ হিসেবে তার অলৌকিকতাকে অস্বীকার করে গেছেন।গেল শতাব্দীর শেষ দিকে এসে কিছু ভাবুক লোকদের চোখের সামনে কোরআন আলোক রশ্মি ছড়িয়ে দিল।সেই আলোয় নির্লিপ্ত এই লোকগুলো কাল অক্ষরের গভীর অন্ধকারে কিছু হীরার দানা দেখতে পেলেন, মহা আনন্দে সেগুলোকে কুড়িয়ে এনে আমাদের চোখের সামনে তুলে ধরলেন; জ্বল জ্বল করে জ্বলে উঠলো সেই হিরের আগুন।সেদিকে তাকিয়ে সকল তার্কিকদের চোখ জ্বলেসে উঠল। স্তিমিত হয়ে এল তর্কের লহরি।ধীরে ধীরে প্রভাত রবির মত বেড়িয়ে আসতে লাগলো পবিত্র কোরআনের অলৌকিক দৃশ্যপট।সূধী পাঠক সেই দৃশ্যপটটি হল ‘পবিত্র কোরআনের গানিতিক সমন্বয়’।পবিত্র কোরআনে নানাভাবে এই সমন্বয় সাধিত হয়েছে।মহান আল্লাহর ইচ্ছায় আপনারাও ধীরে ধীরে সবই দেখতে পাবেন।(এই ওয়েভসাইটে ‘পবিত্র কোরআনের গাণিতিক সমন্বয়’দ্রষ্টব্য।

নানাভাবে সাধিত সমন্বয়ের মাঝে আরবী বর্ণমালার ‘ক্কাফ’ অক্ষরটির গাণিতিক সমন্বয়ও পবিত্র কোরআনের অলৌকিকতা প্রমানের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

‘ক্কাফ’ অক্ষরটি ৫০ নং সূরা ক্কাফ এর প্রারম্ভিক সঙ্কেত, এটি প্রকৃত পক্ষেই কোরআনের একটি বিষ্ময়,যা বুঝা খুবই সহজ কিন্তু তার অবস্থানিক বৈশিষ্টের কোন পরিবর্তন করা মানুষের পক্ষে অসম্ভব। এর আরেকটি বিশেষ বৈশিষ্ট রয়েছে, তা হল অক্ষরটি কোরআন শব্দের প্রথম অক্ষর। এ কারণে বলা হয়ে থাকে ‘ক্কাফ’ ই কোরআনের সংক্ষিপ্ত পরিচয় বাহক।এই অক্ষরটি দিয়েই শুরু হয়েছে ৫০ নং সূরা ‘ক্কাফ’। এই সূরার প্রথম আয়াতটি হল;

ق وَالْقُرْآنِ الْمَجِيدِ

৫০:১ ক্বাফ! সম্মানিত কোরআনের শপথ;

হিসেব করে দেখা গেছে এই ক্কাফ অক্ষরটি সূরা ক্কাফ এ ৫৭ বার ব্যবহৃত হয়েছে,যা ১৯ দিয়ে বিভাজ্য;

57=19×3;

সূরার ১ম আয়াতে পরিস্কার ভাবে বলা হয়েছে,কোরআন অত্যান্ত গৌরবময় গ্রন্থ। দেখুন, কি বিষ্ময়কর ব্যাপার, গৌরবময় শব্দটির (َمَجِيدِ) গাণিতিক মান ৫৭; যা ১৯ দিয়ে বিভাজ্য। 40+3+10+4=৫৭; আরও বিষ্ময়কর ব্যপার হল এই যে, পবিত্র কোরআনকে বুঝাতে ‘কোরআন শব্দটি পবিত্র কোরআনে ৫৭ বার বসেছে, যদিও সূরা জোনাহ্ তে আরও একবার ব্যবহৃত হয়েছে তা হিসেবে ধরা হয়নি কারণ তা পবিত্র কোরআনকে বুঝায়নি।

অনুরূপ দু’টি ছোট ও চিত্তাকর্ষক আয়াত সূরা আর রহমান থেকে উদ্ধৃত করা হল

الرَّحْمَنُ

৫৫:১ করুনাময় আল্লাহ।

عَلَّمَ الْقُرْآنَ

৫৫:২ শিক্ষা দিয়েছেন কোরআন,

আমরা আগেই দেখেjছি যে, এই করুণাময় (الرَّحْمَنُ) শব্দটি পবিত্র কোরআনে ৫৭ বার ব্যবহৃত হয়েছে। আবার কোরআন শব্দটিও ৫৭ বার ব্যবহৃত হয়েছে; বাড়তি যে কোরআন শব্দটি রয়েছে তাতে একটা অতিরিক্ত আলিফ ব্যবহৃত হয়েছে, এবং লেখা হয়েছে ‘কোরআনেন’ রূপে, এ ছাড়াও আরেকটি ব্যবহার রয়েছে কোরআনেহু রূপে ।এখন প্রশ্ন হল কেন এই অতিরিক্ত আলিফের ব্যবহার। হিসেব দেখে কি মন হয়না যে এই অতিরিক্ত আলিফ ব্যবহৃত হয়েছে পবিত্র কোরআনের শব্দ সংখ্যা ৫৭ তে স্থির রাখার জন্যে; যা ১৯ দিয়ে বিভাজ্য।

‘আলীম’ (শিক্ষা দেওয়া হয়েছে) শব্দটি পবিত্র কোরআনে ‘আল্লাহর শিক্ষা’ বুঝাতে ঠিক ১৯ বার ব্যবহৃত হয়েছে নীচে সূরা ও আয়াত সংখ্যা উল্লেখ করা হল;

2-31, 2-32, 2-239, 2-251, 2-282, 4-113, 5-4, 5-110, 12-37, 12-68, 12-101, 18-65, 21-80, 36-69, 53-5,55-2, 55-4, 96-4,   96-5; এখনে প্রতি জোড়ে বাদিকের সংখ্যাটি সূরা সংখ্যা আর ডান দিকেরটি আয়াত সংখ্যা।

. একটি অক্ষরের সীমাহীন বিষ্ময়

আমরা দেখেছি সূরা ক্কাফে ৫৭ টি ‘ক্কাফ’ অক্ষর রয়েছে; এই ৫৭ সংখ্যাটি ১৯ দিয় বিভাজ্য;এই অক্ষরটি কোরআন শব্দের প্রথম অক্ষর। আবার এই অক্ষরটি ৪২ নং সূরার দ্বিতীয় আয়াতে অবস্থিত সংকেত গুচ্ছের তৃতীয় সংকেত। সূধী পাঠক একবারও ভাবা যায় যে, এই অক্ষরটি ৪২ নং সূরা আশ-শুরায় কতবার ব্যবহৃত হয়েছে? ঠিক ৫৭ বার; যা ১৯ দিয়ে বিভাজ্য।

আমরা উপরে দেখলাম এই ক্কাফ অক্ষরটি কোরআন শব্দের প্রথম অক্ষর,এবং দুইটি সূরায় সঙ্কেত হিসেবে বসেছে; সেই বাবহার সংখ্যা ৫৭+৫৭=114=১৯ x৬; ঠিক পবিত্র কোরআনে সূরা সংখ্যার সমান।

১৯ তম অক্ষর

সূধী পাঠক,আমরা জানি ‘ক্কাফ’ অক্ষরটি পবিত্র কোরআনে উপস্থিত সাঙ্কেতিক অক্ষরের একটি; সাঙ্কেতিক অক্ষরগুলো দিয়ে মোট ১৪ টি গুচ্ছ তৈরী হয়েছে,আর,আর এই গুচ্ছ গুলো ব্যবহৃত হয়েছে ২৯ টি সূরায়। বিভিন্ন সূরায় বিভিন্ন সংখ্যায় অক্ষরগুলো ব্যবহৃত হয়েছে। এই এই গুচ্ছ ও অক্ষরগুলোর প্রত্যেকটি নিয়ে আলোচনা যেমনি বিশাল ব্যাপার আবার তা সাধ্যের মধ্যেও নয়।মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে এই বিষ্ময়গুলোকে মানুষের দৃষ্টির সীমানায় এনেদিয়েছেন খুব বেশীদিন হয়নি।মানুষের ভাবনাচিন্তার আবদ্ধ দুয়ারে ১৯ এসে কড়া নাড়ে এই মাত্র গেল শতাব্দীর শেষের দিকে অর্থাৎ ১৯৭৪ সালে। বিবর্তেনের ইতিহাস বেশী দিনের না হলেও মহান আল্লাহর মেহেরবাণীতে এরই মধ্যে অনেক আলোক প্রাপ্তরা এই দিকে আত্মনিয়োগ করেছেন;যাদের নিরলস পরিশ্রমে এই বিষ্ময়ের কিছুটা উন্মোচিত হয়েছে,যার যৎসামান্য আলোচনার সুযোগ মহান রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে দিয়েছেনে, তাঁর কাছে অপরিমিত শুকুর এ জন্যে যে,অন্তত এটুকুও আমরা জানতে পেরেছি,যা আমাদের অন্তরকে শান্ত করেছে,মনের সকল দ্বীধা দূর করেছে, আর নবী রসূলদের কাম্য নিদর্ণশন আজকের সাধারন মানুষ হয়ে আমার দেখতে পারছি ও তার ফল উপলব্দি করছি।অদ্যাবদি আবিস্কৃত অনেক বিষ্ময়ের মধ্যে আমরা গুটিকয়েক নিয়ে আলোচনা করছি  মাত্র, আমরা মনে করি,সবগুলো না হোক অন্তত একটা সঙ্কেত যদি নির্ভুলভাবে কোরআনের অলৌকিকতাকে প্রমান করতে পারে তবে আমাদের মেনে নিতে কোথাও আপত্তি থাকার কথা নয় যে,পবিত্র কোরআন একটি অলৌকিক গ্রন্থ! আদের আলোচ্য ‘ক্কাফ’ অক্ষরটির গাণিতিক সমন্বয় থেকেই পরিস্কার ধারনা পাওয়া যায় যে, এই সমন্বয় কত সুকঠিণ ভাবে পবিত্র কোরআনের সুরক্ষা দিচ্ছে; আজ নির্দ্ধিধায় বলা যায় পবিত্র কোরআনকে আজ অবদি কউ কলুসিত করতে পারেনি;১৪০০ বছর ধরে মহান আল্লাহ তাঁর প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে এসেছেন,উপরন্ত প্রতিরক্ষার সমগ্র কৌশল মানুষের চোখের সামনে তুলে ধরেছেন;ফলে এখন আমাদের দ্বায়িত্ব এই পবিত্র গ্রন্থের পবিত্রতা রক্ষায় সকলেই সচেতন হওয়া।

সাঙ্কেতিক অক্ষর পরীক্ষায় দেখা গেছে যে,পবিত্র কোরআনের এই গাণিতিক পদ্ধতি কত নিঁখুত ভাবে বাইরের অনুপ্রবেশকে প্রতিহত করছে   ও আল্লাহর অবতীর্ণ কোরআন কে সুরক্ষিত করে রেখেছে।বিশ্বের সকল মেধা ও প্রযুক্তি একত্রিত করেও এই গ্রন্থের বিকল্প কিছু তৈরী করা সম্ভব নয়, একথাটি আজ প্রমানিত। আমরা এতক্ষণ এই ক্কাফ অক্ষরটির সমন্বয় দেখছিলাম,যেন দিগন্ত বিস্তৃত এর বৈশিষ্ট ছড়িয়ে রয়েছে; আমরা যদি ভাল করে তাকিয়ে দেখি,দেখতে পাবো অনেক চিত্তাকর্ষক সমন্বয়ে সমন্বিত এই অক্ষরটি।আমরা দেখেছি এই অক্ষরটির গাণিতিক মান পবিত্র কোরআনের এই গাণিতিক পদ্ধতির জন্যে অত্যান্ত জরুরী।আমরা আমরা নীচের ছকে দেখবো যে,

ক্রম সংখ্যা অক্ষর গানিতিম মান ক্রমানুসারে
1 আলিফ 1
2 বা 2
3 জিম 3
4 দাল 4
5 হে 5
6 ওয়া 6
7 জে 7
8 হা 8
9 তা 9
10 ইয়া 10
11 কাফ 20
12 লাম 30
13 মীম 40
14 নুন 50
15 সিন 60
16 আয়েন 70
17 ফা 80
18 সাদ 90
19 ক্কাফ 100

গাণিতিক মানের ক্রম অনুসারে ‘ক্কাফ’ অক্ষরটি ১৯ তম অক্ষর ও তার গাণিতিক মান ১০০; একটি চমৎকার অবস্থান ও উৎকর্ষজনিত মান।এখন আমরা যদি পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন সূরায় ১৯তম আয়াতে ‘ক্কাফ’ অক্ষরের উপস্থিতি হিসেব করি তবে দেখতে পাবো এরকম ৭৬ টিঅবস্থান রয়েছে; যা ১৯ দিয়ে নিঃশেষে বিভাজ্য;    ৭৬=১৯x৪;

এভার দেখাযাক যে,সকল সূরাসংখ্যা ১৯ এর গুণিতকতাদের মধ্যে ‘ক্কাফ’ রয়েছে ক’টি।হিসেব করে দেখা গেছে যে এরূপ ‘ক্কাফ’ অক্ষরের সংখ্যা ২২৮ টি; যা ১৯ দিয়ে নিঃশেষে বিভাজ্য।

২২৮=১৯ x১২; কোন্ সূরায় ক্কাফ অক্ষরটি কতবার আছে তা নীচের ছকে দেখানো হল

যে সখল সূরার সূরাসংখ্যা ১৯ এর গুণিতক
19  38   57   76  95   114
86+ 74 + 49 + 15 + 3 + 1  = 228= 19×12

অনেকেই প্রশ্ন করে’১৯ কি এতই জরুরী?এই সমন্বয় কি পূর্ণ কোরআন জুড়ে রয়েছে?যদিও এই বিষ্ময় থেকে থাকে, তবুও এটি কি খুব জরুরী?’ খুব সুন্দর কথা! মহান আল্লাহকে বিশ্বাস করার মধ্যে প্রমাণের আবশ্যকতা থাকতেই হবে এমনতো কোন কথা নেই।মহান আল্লাহ এমন কথা কোথাও বলেনওনি যে,প্রমাণ ছাড়া তাঁকে বিশ্বাস করতে নেই; বরং ছাড়াই তাঁকে স্বীকার করতে নির্দেশ দিয়েছেন;কারণ এই মহাবিশ্বের দিকে তাকালেই বুঝতে বাকী থাকেনা যে, তিঁনি আছেন!আর ভাবুক সম্প্রদায়ের জন্যে পবিত্র কোরআনে এমন অনেক আয়াতও রয়েছে তার মর্মবাণী হল এই যে, সৃষ্টির প্রতি তাকিয়ে ভাবলেই স্রষ্টার সন্ধান পাওয়া যাবে।এতো হল বিশ্বাসের কথা!আমার আপনার বিশ্বাসের ভিত কতটা মজবুত তার একটা পরীক্ষা ব্যবস্থা;এই পরীক্ষায় শতকরা একশতভাগই যে উত্তীর্ণ হয়ে যাবে তার নিশ্চয়তা কিন্তু কোথাও নেই।আর এই পরীক্ষা হল সেই লোকদের জন্যে যার মস্তিস্কে যুক্তি নামক কোন দর্শন ক্রিয়া করেনা।যার চিত্তে দোদুল্যমানতার অবকাশ নেই,দৃষ্টি যার অবারিত,সৌন্দর্যের মধ্যে যার চিত্ত স্রষ্টার অস্তিত্ব খুঁজে পায়;তার জন্য।যুক্তির সমীকরণ যার চিত্তকে সদা চঞ্চল করে রাখে ১৯ তার জন্যে অতীব জরুরী।চঞ্চল চিত্তে স্থিরতা আনার জন্যেই মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনের এই ব্যবস্থাটি প্রোথিত করেছেন,এবং মানুষ একদিন যাতে খুঁজে পায় সেজন্যে সূরা আল মুদ্দাসসির এর ৩০-৩১ নং আয়াত দু’টি অবতীর্ণ করেছেন।

৭৪:৩০ এর উপর নিয়োজিত আছে উনিশ

৭৪:৩১ আমি জাহান্নামের তত্ত্বাবধায়ক ফেরেশতাই রেখেছি। আমি কাফেরদেরকে পরীক্ষা করার জন্যেই তার এই সংখ্যা করেছি-যাতে কিতাবীরা দৃঢ়বিশ্বাসী হয়, মুমিনদের ঈমান বৃদ্ধি পায় এবং কিতাবীরা ও মুমিনগণ সন্দেহ পোষণ না করে এবং যাতে যাদের অন্তরে রোগ আছে, তারা এবং কাফেররা বলে যে, আল্লাহ এর দ্বারা কি বোঝাতে চেয়েছেন। এমনিভাবে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচ্ছা সৎপথে চালান। আপনার পালনকর্তার বাহিনী সম্পর্কে একমাত্র তিনিই জানেন এটা তো মানুষের জন্যে উপদেশ বৈ নয়।

উপরের আয়াত দু’টিও সেই কথাই বলছে,১৯ মুমিদের বিশ্বাসকে দৃঢ় করবে,কিতাবীরা দৃঢ় বিশ্বাসী হয়।অর্থাৎ স্রষ্টার অস্তিত্ব যাদের কাছ যুক্তির আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে,তাদের অন্তর স্থির করবে; কারণ তারা বলে থাকে ‘কোরআন আসমানী কিতাব নয়,এটি আসমানী কিতাব নকল করে নবী মোহম্মদ (সাঃ) রচনা করেছেন।১৯ তাদের সেই কথার জবাব দিয়েছে। ১৯ এর প্রয়োজনীয়তা নেই বলে যারা তাদের বিশ্বাসের ভিতকে শক্তিশালী ও মজবুত দেখাতে চান তাদের প্রতি আমার সবিনয় নিবেদন যে,মানুষের সহজাত বৈশিষ্ট এই যে,প্রমাণ,যুক্তিকে নীরেট করে তোলে;তাকে আর কষ্টিপাথরে যাচাই করার প্রয়োজন হয়না।অন্তরের দোদদুল্যমানতা দূর হয়ে নিজের চোখ বিশ্বাসের নিয়ামক হয়ে উঠে;তখন অবিশ্বাস করতে হলে নিজের চোখ নিজের চিত্ত অবিশ্বস্থ হয়েউঠে।তাই সর্বকালের মানুষ প্রমানকে প্রাধাণ্য দেয় বেশী। তাইতো আল্লাপাক নিজেই মুমিদের বিশ্বাসকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বিশ্বাস দৃঢ় হওয়ার কথা বলেছেন।তাই আসুন,বিশ্বাসের পাশাপাশি পরিক্ষার দ্বারা আসল হীরাটি চিনে নেই,তাহলে আর কাঁচ বলে ভুল হবেনা!প্রমাণ আপনার চিত্তকে দোদুল্যমান হতে দেবেনা,শান্তির গভীরতায় পৌঁছে দেবে।

আমরা উপরে ১৯ এর যে প্রসঙ্গ টানলাম তা পবিত্র কোরআনের গাণিতিক কোড,এ সম্মন্ধে আরও জানতে হলে ‘পবিত্র কোরআনের গাণিতিক সমন্বয়’ গ্রন্থটি পড়ুন।মহান আল্লাহর ইচ্ছা ও তাঁর করুণা পেলে আমরা ধীরে ধীরে এই ১৯ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

সূত্র-মহান গবেষকদের গবেষণা কর্ম থেকে সঙ্কলিত।

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান