ভেন এলেন বেল্ট

 

 

ভেন এলেন বিকিরন বেষ্টনী হল ভূপৃষ্টের বাইরে দিয়ে চতুর্দিকে ভূচুম্বক ক্ষেত্রের মধ্যে তাল আকৃতির অঞ্চল; যে অঞ্চলে অতি উচ্চশক্তির আহিত কণা জাল বিস্তার করে আছে।জেমস্ এ ভেন এলেন এর নামানুসারে এই অঞ্চলের নাম রাখা হয়েছে।ভেন এলেন একজন পদার্থবিদ;তিনি ১৯৫৮ সালে এই অঞ্চলটি আবিস্কার করেন। এই অঞ্চলটি ঘণত্ব বিষুবীয় অঞ্চলে অত্যান্ত বেশী,আর মেরু অঞ্চলে বলতে গেলে নাই বললেই চলে।তবে দুই অঞ্চলের মধ্যে কোন শূণ্যতা নেই।একটি উচ্চশক্তির চার্জিত কণা অঞ্চল,অপরটি উচ্চশক্তির চুম্বকত্ব অঞ্চল। মূলত দু’টিই আহিত কণার প্রবাহ অঞ্চল, যারা ক্রমান্বয়ে একতে মিশে গেছে। ভেন এলেন অঞ্চলটি দুটি স্তরে বিভক্ত। ভিতরের স্তরটি ভূপৃষ্ঠ থেকৈ তিন হাজার কি মি উপরে অবস্থিত আর বাইরের স্তরটির সবচেয়ে বেশী ঘনত্ব হল ১৫-২০ হাজার কি মি উচ্চতার মধ্যে।আবার অনেকেই মনে করেন তা ৩৮০০০ কি মি উপরে।

 

আরও মনে করা হয়ে থাকে যে, এই বেষ্টনীর অধিকাংশ কণাই সৌরবায়ু থেকে আসে এবং কিছুআসে অণ্যান্ন মহাজাগতিক বিকিরণ থেকে।এই বেষ্টনীর বাইরের স্তরে থাকে শক্তিশালী ইলেক্ট্রন এবং ভিতরের স্তরে থাকে প্রোটন ও ইলেকট্রন জোড় অবস্থায়; এই বিকিরণ বেষ্টনিটিতে অল্প পরিমানে বিভিন্ন নিউক্লি( nuclei) ও থাকে; তন্মধ্যে আলফা কণাও রয়েছে।এই বেষ্টনী উপগ্রহগুলোকে বিপন্ন করে তোলে।কোন উপগ্রহের কক্ষপথ যদি এই বেষ্টনীর মধ্যে পরে তবে তার যন্ত্রপাতি গুলোর ভাল সুরক্ষা আবরন থাকতে হয়,নইলে তা এই বিকিরণ বেষ্টনীর বিকিরণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে।২০১৩ সালে নাসা ভেন এলেন বেল্ট পর্যোবেক্ষন কালে আরেকটি তৃতীয় বেষ্টনীকে প্রায় চার সপ্তাহ দেখতে পেয়েছে যা সূর্যো থেকে আগত আন্তনাক্ষত্রিক আঘাতকারী(shock wave) তরঙ্গ প্রবাথে সৃষ্টি হয়েছিল ।বিকিরণ বেষ্ঠনীর বাইরের বৃহদাংশ অনেকটা ঘূর্ণবাতের মত, তার বিস্তৃতি ১৩ থেকে ৬০ হাজার কি মি।তার সবচেয়ে বেশী ঘণত্বপূর্ণ অঞ্চল হল ২০-৩০ হাজার কিম’র মধ্যে।বাইরের বিকিরণ বেষ্টনীর অধিকাংশই তৈরী হয়েছে আন্তবিকিরণ প্রসারণ(inward radial diffusion) ও প্লাজমা তরঙ্গ কর্তৃক শক্তির ত্বরাণ্বিত প্রবাহ দ্বারা।তবে ইলেকট্রন গুলো অনবরতই বায়ুমণ্ডলীয় নিরপেক্ষ কণা কর্তৃক অপসারিত হচ্ছে।বাইরের এই বেষ্টনীটি প্রধাণত উচ্চশক্তি সম্পন্ন (0.1–10 MeV) ইলেট্রন জালি, ভূচুম্বক ক্ষেত্র দ্বারা সৃষ্ট।এখানে নানাপ্রকার আয়নও রয়েছে; অধিকাংশ আয়নই শক্তিশালী প্রোটন রূপে আছে।তা ছাড়াও কিছু পরিমানে আল্ফা কণা ও ধণাত্মক অক্সিজেন আয়ন (O+) থাকে,যেমনটা আয়নোস্ফিয়ারে দেখা যায়।কণার এই মিশ্রন থেকে মনে হয় এরা বিভিন্ন উৎস থেকে আসে। ভেন এলেন বেল্ট পর্যোবেক্ষণ কমিটি নাসার সম্মেলনে তৃতীয় আরেকটি রেডিয়েসন বেল্টের সন্ধান দেয়,তারা বলেন যখন সূর্যের করোনাল বিচ্ছূরণ হতে থাকে তখন ভেন এলেন বেল্টের বহিঃস্তরে আর একটি অস্থায়ী উপস্তর দেখা দেয়,যা প্রায় মাসখানেক আলাদা ভাবে থাকে এবং ধীরে ধীরে তা বহিঃস্তরের সাথে মিশে যায়।ভেন এলেন বেল্টের অভ্যান্তরীন স্তরটি শক্তিশালী ইলেট্রন দিয়ে তৈরী, এই স্তরটি ১০০০ কিমি থেকে প্রায় ৩৭০০ কিমি পর্যোন্ত বিস্থৃত।সৌর বায়ুর উৎপাত যখন বেড়ে যায় তখন এই স্তরের সীমানা   ২০০ কিমি তে পর্যোন্ত নেমে আসে। এই স্তরে উচ্চ ঘনত্বে শত শত কিলো ইলেট্রিক ভোল্ট(keV) ইলেট্রন থাকে এবং একশত মেঘা ইলেট্রন ভোল্ট প্রোটন কণিকা এই অঞ্চলে শক্তিশালী চুম্বক জাল বিস্তারকরে থাকে।বিজ্ঞানীরা মনে করেন যে, নীচের স্তরে প্রোটন শক্তি ৫০ MeV অতিক্রম করলেই মহাজাগতিক রশ্মির সংঘর্ষে বায়ুমণ্ডলের উপরের স্তরে নিউট্রনের বিটা ডিকে হতে থাকে।তারা আরও মনে করেন যে, নিম্নশক্তির প্রোটন উৎপন্ন হয় ভূচুম্বক ঝরের প্রোটন ডিফউসন থেকে।

 

২০১৪ এর মার্চে নাসার বিজ্ঞানীরা লক্ষ্য করেন যে,ভূচুম্বকত্বের সামান্য ভারসাম্যের পরিববর্তনে ভেন এলেন বেল্টের অভ্যান্তরীন স্তরটি দক্ষিন আটলান্টিক অঞ্চলে সবচেয়ে কাছাকাছি চলে এসেছিল। বিজ্ঞানীরা মনে করেন যে, ভূচুম্বক অক্ষের তীর্যোকতা পরির্তনের ফলে এমনটা হয়েছিল।গ্রহের ঘূর্ণন একপ্রকার কম্পনশীল দূর্বল তরিৎ ক্ষেত্র উৎপন্ন করে যা সম্পূর্ণ অভ্যান্তরীন ভেন এলেন স্তরের মধ্যে প্রবাহিত হয়।এই ক্ষেত্রটি ইলেকট্রনকে প্রভাবিত করে; ফলে তারা তরল প্রবাহের ন্যায় আচরণ করে।এই ভূ কম্পন ধীরে ধীরে বিস্তৃত হতে থাকে ফলে ঐ তরল কুণ্ডলী পাকিয়ে সমগ্র অভ্যান্তরীন স্তর জুড়ে ঢোড়াকাটা চিত্র ধারন করে এবং তা বায়ুমণ্ডলের উপরের স্তর বা ৮০০-১৩০০০ কিমি পর্যোন্ত বিস্তৃতি লাভ করে।।

সাধারনতঃ মনে করা হয় ভেন এলেন বেল্টের স্তর দ’টি আলাদা পদ্ধতিতে উৎপন্ন হয়েছে।অভ্যান্তরীন স্তরটি প্রধানত শক্তিশালী প্রোটন কনিকা দ্বারা ঘটিত, যা তথাকথিত ‘আলবেদো’ নিউট্রন ভেঙ্গে উৎপন্ন হয়। এই আলবেদো নিউট্রন উৎপন্ন হয়ে থাকে বায়ুমণ্ডলের উপরের দিকে মহাজাগতিক রশ্মির সংঘর্ষ থেকে।বাইরের স্তরটি তৈরী হয়ে থাকে মূলত ইলেকট্রণ দ্বারা।এই ইলেট্রন বিচ্ছুরিত হয়ে থাকে ভূ-চুম্বক প্রবাহ থেকে।অভ্যান্তরীণ স্তরের মধ্যে বক্র ভূচুম্বক ক্ষেত্রে সৌরবায়ুতে আগত কণিকাগুলো ফাঁদে পড়ে। কণাগুলো চক্রাকারে ঘুরতে ঘুরতে চুম্বক বলরেখা বরাবর আগাতে থাকে;ক্রমান্বয়ে ঘন চুম্বক ক্ষেত্রের প্রাবল্যে গতি স্তিমিত হয়ে যায় এবং একসময় প্রতিফলিত হয়ে থাকে;এবং মেরু অঞ্চলে গিয়ে পড়ে।   (সূত্র-Wikipedia)

সূধী পাঠক, আমরা জানি বিভিন্ন ত্যাজস্ক্রীয় রশ্মি নানাবিদ বাঁধা অতিক্রম করে এগিয়ে যেতে পারে। আমাদের ব্যাবহার উপযোগী সাধারন রশ্নি এক্সরের ক্ষমতা সম্পর্কে কমবেশী ধারনা আমাদের আছে;তার চেয়ে হাজার লক্ষ্যগুনে বেশী শক্তিশালী ও ক্ষতিকর রশ্মি মহাশূণ্য থেকে প্রতি নিয়ত ভেসে আসছে;যারা বহু মোটা কঠিণ ধাতুস্তর এমনকি কঠিণ কঙ্ক্রিটের স্তর বেধ করে অনায়াসে চলে যেতে পারে; কিন্ত ভেন এলেন বেল্ট আমাদেরকে ত্যজস্ক্রিয় এই রশ্নির আঘাত থেকে রক্ষা করে।এটি চৌম্বক ও বৈদ্যতিক ক্ষেতের অতি শক্তিশালী মিশ্র ক্রিয়ার দ্বারা অনাখাঙ্কিত সকল রশ্মিকে অনুপ্রবেশে বাঁধা দেয়। এই নিরাপত্তা বেষ্টনী না থাকলে পৃথিবীর বুকে জীবনধারণ হয়তোবা সম্ভবই হতনা।প্রাণঘাতী এই রশ্মিগুলো সূর্যো ভিন্ন অন্যান্ন গ্রহ থেকেও আসছে; আর এই রশ্মিগুলো ভ্যান এলেন বেল্টের মধ্য দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করতে পারেনা।বিজ্ঞান বলছে হিরোসীমার এটম বোমার একশত বিলিয়ন গুণ শক্তি সম্পন্ন এই প্লাজমা মেঘের স্রোত ঐ স্তর বেধ করে আসতে পারেনা।আমাদের ভূপৃষ্ঠের প্রায় ৬০ হাজার কিমি উপর অবদি বিস্তৃত এই ভ্যান এলেন বেল্ট অতি যত্নে রক্ষা করে চলেছে মহান প্রভুর এই সৃষ্টি কুলকে। সম্ভবত এই কারনেই মহান আল্লাহ সূরা আম্বিয়ার ৩২ নং আয়াতে বলেছেন,

وَجَعَلْنَا السَّمَاء سَقْفًا مَّحْفُوظًا وَهُمْ عَنْ آيَاتِهَا مُعْرِضُونَ

২১:৩২ আমি আকাশকে সুরক্ষিত ছাদ করেছি; অথচ তারা আমার আকাশস্থ নিদর্শনাবলী থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখে।

সূধী পাঠক, লক্ষ্য করুন আয়াতটি,কি বিষ্ময়কর কথা জানিয়েছে আজ থেকে ১৪০০ বছর আগে।তিনি আকাশকে সুরক্ষিত ছাদ করেছেন; বিজ্ঞান বলছে ভ্যান এলেন বেল্ট অত্যান্ত কঠিন বাঁধা ক্ষতিকর ত্যাজস্ক্রীয় রশ্মির জন্য। অত্যান্ত শক্তিশালী রশ্মিও ঐই স্তর ডিঙিয়ে অনুপ্রবেষ করতে পারেনা। তাকে সুরক্ষিত ছাদ বলবেননাতো বলবেন কি? ‘অথচ তারা আমার আকাশস্থ নিদর্শনাবলী থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখে’।কাদেরকে লক্ষ্য করে এ কথা বলা হয়েছে? এরা কি ১৪০০ বছর আগেকার মানুষ? না! সুধী পাঠক, এরা ১৪০০ বছর আগেকার মানুষ নয়;কারণ তখনকার মানুষ ভ্যান এলেন বেল্টের কথা জানতোনা,জানতোনা এই প্লাজমা মেঘের কথা। হালে এ সংবাদ এসে পৌঁছেছে আমাদের কাছে আজকের বিজ্ঞানের কল্যানে। মহান আল্লাহর এই নিদর্শনের কথা জেনেছি আমরা; আর মুখ ফিরিয়ে রাখার কথাও বলা হয়েছে আমাদেরকে লক্ষ্য করেই।এর পরেও যদি আমরা মনে করি পবিত্র কোরআন মানব রচিত দর্শন শাস্ত্র; তবে কি তা মুখ ফিরিয়ে রাখা নয়? আমাদের চারিপার্শ্বের সুবিণ্যস্থ বায়ুমণ্ডলীয় স্তর,পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে বহিস্তর পর্যন্ত আনুপাতিক বিণ্যাসে বিন্যস্থ স্তরের সম্মিলিত সমন্বয়ের ফলেই সম্ভব হয়েছে আমাদের এই মাতৃ গ্রহটিতে প্রাণের বিন্যাস।আমাদের মহা কুশলী মহান প্রভুর পূর্ব পরিকল্পনা ও জটীল গাণিতিক হিসেবের ফলেই সম্ভব হয়েছে অভূতপূর্ব সমন্বিত ব্যবস্থা। কোন সচেতন যুক্তিই এ কথা স্বীকার করতে পারেনা যে এত জটীল সমন্বয় আপনা আপনি সম্ভব হতে পারে; আর পবিত্র কোরআন কোন মানবীয় মেধা ও অভিধা থেকে সৃষ্টি।

সূধী পাঠক,তর্ক শাস্ত্রের যুক্তি দিয়ে তার পরেও যদি বলেন,সৃষ্টি থেকে নানা বিবর্তনের মধ্যদিয়ে আমাদের পৃথিবী তার চারেপার্শ্বের পরিবেশ প্রাণের অনুকুলে আসার পরেই এখানে প্রাণ সৃষ্টি হয়েছে স্বস্ফূর্তভাবে।আপনার এই যুক্তিটিকেও যে আগ্রাহ্য করা যায়না,কারণ,আমরা জানিনা কি হয়েছিল,কিভাবে প্রাণ এসেছিল! যুক্তিহীণভাবে আবেগ দিয়ে নিজের অবৈজ্ঞানীক চিন্তাধারাকে শুধু চাপিয়ে দিলেইতো তা গ্রহনযোগ্য হয়ে যায়না!যেহেতু কোন চাক্ষুস প্রমান নেই ফলে বৈজ্ঞানীক গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যের যৌক্তিক বিশ্লেষণ ও তার সাথে সম্ভাব্যতার সংমিশ্রণ ঘটিয়ে যা পাওয়া যায় তাকেই আপাত সত্য বলে ধরে নিতে হয়।বাস্তবতার নীরিখে সত্যকে না খঁজে শুধুমাত্র পাল্টা প্রশ্ন দ্বারা কোন দাবীকে হার মানানোর মধ্যে কোন বাহাদুরী নেই।যৌক্তিক বিবেচনার মধ্যেই থাকে উত্তোরণের পথ।

সূধী পাঠক, আমরা দেখেছি আমাদের চারিপার্শ্বের বায়ুমণ্ডলের বহুবিদ সমন্বয়ের দ্বারা রক্ষা হচ্ছে প্রাণী জগত।আর এই সমন্বয়ের যে কোন উপাদান সাধারন পরিস্থিতিতে সামান্য পরিবর্তনের মা্ধ্যামে বিপদ ডেকে আনতে পারে।যেমন ধরুন আমাদের চারিপার্শ্বের বায়ু মণ্ডল, যার মধ্যে রয়েছে নানাবিদ গ্যাস; রয়েছে ওজন স্তর; এদের যে কোনটার পরিবর্তন প্রাণীকুলের জীবনের আশঙ্খা হয়ে দেখা দিতে পারে। বিজ্ঞান বলছে ওজন স্তরের কাজের ক্ষমতা কমে গেলে সূর্যালোকের সাথে চলে আসবে নানা প্রকার ক্ষতিকর রশ্মি; থাছাড়া ভেন এলেন বেল্টের কার্যোকারিতার কথাতো উপরেরই দেখলেন।ফলে সম্ভাব্যতার দিক থেকে কোন ক্রমেই আপনা আপনি এতসব সমন্বয় সাধিত হতে পারেনা। অবশ্যই এই কাজের জন্যে কোন এক মহাকুশলী তার নিয়ন্ত্রন রক্ষা করে চলছেন।

তাইতো মহান প্রভু দ্ব্যর্থহীন ভাষায় সূরা গাফির এর ৬৪ নং আয়াতে ঘোষনা করেছেন,

 

اللَّهُ الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ الْأَرْضَ قَرَارًا وَالسَّمَاء بِنَاء وَصَوَّرَكُمْ فَأَحْسَنَ صُوَرَكُمْ وَرَزَقَكُم مِّنَ الطَّيِّبَاتِ ذَلِكُمُ اللَّهُ رَبُّكُمْ فَتَبَارَكَ اللَّهُ رَبُّ الْعَلَمِين

৪০:৬৪ ‘আল্লাহ্‌ পৃথিবীকে করিয়াছেন তোমাদের জন্য বাসস্থান,আকাশকে করিয়াছেন ছাদ এবং তোমাদের আকৃতি সুন্দর করিয়াছেন এবং তিনি তোমাদেরকে দান করিয়াছেন পরিচ্ছন্ন রিযিক। তিনি আল্লাহ্‌ তোমাদের পালন কর্তা;বিশ্বজগতের পালন কর্তা,আল্লাহ্‌ বরকত ময়।– ইসলামিক কল সেন্টার।

৭৮:১২‘আমি তোমাদের উর্দ্বে নির্মাণ করিয়াছি সুদৃঢ়ভাবে বিন্যস্ত অনেক স্তর।’

কত সুস্পষ্ট ও সার্থক উপমা! বাড়ির ছাদ আমাদেরকে রক্ষা করে উপর থেকে আপতিত রোঁদ-বৃষ্টি ঝড়-জল ও নানা আপদ-বিপদ থেকে। আমরা জানি আকাশ বলতে চারিদিকের অসীম শূণ্যতাকে বুঝায় যার স্থানে স্থানে জায়গা করে নিয়েছে মহাজাগতিক বস্তুপুঞ্জ। উপরুক্ত আয়াতের আকাশের পরিধি বলতে দয়াময় হয়তো আমাদের ভূ-মণ্ডলীয় আকাশ অর্থাৎ আমাদের পৃথিবীর চারিদিকে বিস্তৃত বায়ুমণ্ডলীয় আকশকে বুঝিয়েছেন, কারণ বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা নীরিক্ষায় দেখা যাচ্ছে আমাদের এই বায়ুমণ্ডলই পৃথিবীকে মহাজাগতিক সকল প্রকার আঘাত থেকে প্রতিনিয়ত রক্ষা করে যাচ্ছে। অর্থাৎ ছাদ স্বরূপ কাজ করছে। তাহলে এ ক্ষেত্রে অসীম মহাশূণ্যকে ধরে নেওয়ার কোন অবকাশ নেই।

তাইতো পিটার ওয়েন তার প্লানেট আর্থ গ্রন্থে মন্তব্য করেন ÔThe Earth was not a readymade home for creature like us. It was to be modified by earlier forms of life before it was suitable.’ পৃথিবী আমাদের জন্যে সদা প্রস্তুত হওয়া আবাসস্থল ছিলনা,ইহাকে তৈরী করা হয়েছে প্রাণীর জীবন যাত্রার উপযোগী করে। তাইতো মহান প্রভু বলেছেন,

لَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ سَخَّرَ لَكُم مَّا فِي الْأَرْضِ وَالْفُلْكَ تَجْرِي فِي الْبَحْرِأَ بِأَمْرِهِ وَيُمْسِكُ السَّمَاء أَن تَقَعَ عَلَى الْأَرْضِ إِلَّا بِإِذْنِهِ إِنَّ اللَّهَ بِالنَّاسِ لَرَؤُوفٌ رَّحِيم

 

২২:৬৫ ‘তুমি কি লক্ষ্য কর না যে,আল্লাহ্‌ তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করিয়াছেন পৃথিবীতে যাহাকিছু আছে তৎসমুহকে,তাঁহারই নির্দেশে সমুদ্রে জাহাজ চলে,পৃথিবী রক্ষাপায় মহাজাগতিক বস’ সমুহের আঘাত হইতে। নিশ্চই আল্লাহ মানুষের প্রতি অত্যান্ত দয়ালূ ও করুণাময়।’

 

-আবদুল আজিজ খন্দকার-

১০ মে ২০১৪

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান