জোর বেজোর সংখ্যা- By the even and the odd

জোর বেজোর সংখ্যা- By the even and the odd

সূরা আল ফজর এর ৩ নং

وَالشَّفْعِ وَالْوَتْرِ

৮৯:৩ যাজোড়ওযাবিজোড়

3- By the even and the odd

৮৯ নং সূরার ৩ নং আয়াতে মহান আল্লাহ ‘জোর’ বিজোড় এর দিকে ইঙ্গিত করেছেন। আরবী وঅক্ষরটি যখন সম্পূর্ণ আলাদা বসে তখন এটি অব্যয় রূপে বসে যা পূর্ণ শব্দের মর্যাদা পায়; আর পরবর্তী শব্দের সাথে সম্পর্ক বুঝায়; এই জোর বেজোর এর প্রতি গবেষক Cemnishon and Abdullah Jalghoomঅণুপ্রানিত হয়ে গবেষনা শুরু করেন। তাদের পরীখ্ষায় দেখা যায় যে পবিত্র কোরআনে সূরা ও আয়াত একটা সুনির্দিষ্ট হিসেবের মধ্যে সাজানো হয়েছে। হিসেব করে দেখা গেছে, এই সূরাগুলির আয়াত সংখ্যা ইচ্ছা করেই এই নির্দিষ্ট নিয়মে জোর বেজোর করা হয়েছে। সূরা সংখ্যার সাথে আয়াত সংখ্যা যোগ করলে যে সংখ্যাগুলো তৈরী হয় তার মধ্যে একটা বিষ্ময়কর সমন্বয় লক্ষ্য করা গেছে! উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে সূরা ফতিহার সূরা সংখ্যা ১ ও আয়াত সংখ্যা ৭; যোগ করলে দাঁড়ায় ৮, তহলে সংখ্যাটি জোড়,আবার ৩ নং সূরার আয়াত সংখ্যা ২০০; অনুরূপভাকে যোগকরলে সংখ্যাটি দাঁড়ায় ২০৩,যা একটি বিজোড় সংখ্যা।এই ভাবে হিসেব করলে ১১৪ টি সূরার জন্য আয়াত ও সূরার মোট ১১৪ টি যোগফল পাব;তন্মধ্যে যে সংখ্যাগুলো জোড় তাদের আলাদা করে যোগ করলে দেখা যায় যোগফল হয় ৬২৩৪; আবার বিজোর সংখ্যাগুলোর যোগফল হয় ৬৫৫৫। পবিত্র কোরআনের ১১৪ টি সূরার জন্যে ছক তৈরী করলে এক বিষ্ময়কর সামজ্ঞস্য আপনার চিত্তকে হতবাক করে তোলবে। ‘পবিত্র কোরআন যে এক বিষ্ময়কর কাঠামোতে সাজানো’ তা আপনার চোখে পরিস্কার হয়ে ঊঠবে, আপনাকে এ কথা বিশ্বাস করাতে হবেনা যে, পবিত্র কোরআন মহান আল্লাহর সাজানো; তা আপনি নিজে নিজেই স্বীকার করে নেবেন।অনেক ইতিহাস বিদগন বলে থাকেন যে, পবিত্র কোরআনকে লিখিত রূপ দেওয়ার সময় হয়রত ওসমান (রাঃ) সূরা ও আয়াত গুলোকে সাজিয়েছেন। কিন্তু এই ছকটি দেখলে আপনারও মনে কোন দ্বিধা থাকবেনা যে,কোরআনকে সাজানো কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। এমন কোন ইতিহাস আজও খুঁজে পাওয়া যায়নি যে, কোরআনের এই সমন্বয় সম্পর্কে তখনকার মানুষ কিছু জনতেন। এতে কোন সন্দেহ নেই যে পবিত্র কোরআন মহান আল্লাহর নির্দেশনায়ই সজ্জিত হয়েছে, তা তিঁনি যে ভাবেই করে থাকুননা কেন। আমার পরবর্তী পৃষ্টায় সংক্ষিপ্ত আকারে ছকটি দেখালাম।

 

 

সূরা সংখ্যা মোট আয়াত সংখ্যা সূরা ও আয়াত সংখ্যার যোগফল জোড় সংখ্যা বিজোড় সংখ্যা
1 7 8 8
2 286 288 288
3 200 203 203
4 176 180 180  
5 120 125 125
6 165 171 171
19        
57 29 86 86  
109 6 115   115
110 3 113 113
111 5 116 116
112 4 116 116
113 5 118 118  
114 6 120 120
মোট- 6555 6234   6234 6555

 

আমরা ছকে দেকতে পাচ্ছি সূরা সংখ্যাগুলিকে যোগ করলে যেগফল হয় ৬৫৫৫; যা ছকের বিজোড় সংখ্যাগুলির যোগফলের সমান; আবার পবিত্র কোরআনে সূরাস্থিত আয়াতগুলি যোগ করলে মোট সংখ্যাটি পাওয়া যায় ৬২৩৪; যা ছকের জোড় সংখ্যাগুলোর যোগফলের সমান।এমনটাতো হওয়ার কথা ছিলনা,কিন্তু হয়ে আছে! এই বিষ্ময়কর সামঞ্জস্য কি করে হল একবারও কি ভেবে দেখেছেন? ভাববার পরেও কি মনে হয় পবিত্র কোরআন কোন মানুষের রচনা হতে পারে? এই প্রমান কি যথেষ্ট নয় যে এই সমন্বয় কোন অলৌকিক স্বত্ত্বার স্বাধীন দক্ষতা।

আমরা জানি পবিত্র কোরআনে ১১৪ টি সূরা রয়েছে; এই ১১৪ সংখ্যাটি ১৯ দিয়ে বিভাজ্য; অর্থাৎ   ১১৪=১৯ x ৬; এটি একটি সমীকরণ বলা যেতে পারে; আমরা একে নতুন ভাবে সাজাতে পারি;

যেমন,   ১১৪=১৯ x ৬

বা,          ১১৪=(১০+৯) x ৬

বা, ১১৪=৬০+৫৪………………..(১)

সূধী পাঠক উপরের ছকে হিসেব করে দেখুন জোর সংখ্যা আছে মোট ৬০ টি আর বিজোর সংখ্যা ঠিক ৫৪ টি;

৬০ টি জোর সংখ্যার মধ্যে যে সূরাগুলো রয়েছে তার ৩০টি সূরা সংখ্য জোর আর বাকী ৩০টি বিজোড়; আবার ৫৪ টি বিজোর সংখ্যা তৈরী কারী সূরাগুলোর মধে ২৭ টি জোর সংখ্যার সূরা এবং অবশিষ্ট ২৭টি বিজোর সংখ্যার সূরা। তাহলে সার্বিক ভাবে হিসেব করলে দেখা যায় যে,

৩০+২৭=৫৭ টি জোর সংখ্যার সূরা

৩০+২৭=৫৭ টি বিজোর সংখ্যার সূরা;

আরেকটি সমীকরণ দেখুন;

৫৭=৩ x ১৯=৩(১০+৯)=৩০+২৭………………….(২)

সমীকরণ ১ ও ২ এর মধ্যে পবিত্র কোরআনের সূরাগুলো ৪ টি দলে বিভক্ত হয়ে গেছে; নীচে তাদের উদাহরণ দেওয়া হল;

১. বিজোর সূরা সংখ্যা; আয়াত সংখ্যাও বিজোর যেমন, সূরা ফতিহা ,সূরা সংখ্যা ১, আয়াত সংখ্যা ৭।

২. বিজোর সূরা সংখ্যা;আয়াত জোর সংখ্যা; সূরা আল ইমরান;সূরা সংখ্যা ৩; আয়াত সংখ্যা ২০০

৩. জোর সূরা সংখ্যা; আয়াত সংখ্যা বিজোর; যেমন সূরা আল আনাম, সূরা সংখ্যা ৬,আয়াত সংখ্যা ১৬৫;

৪. জোর সূরা সংখ্যা,আয়াত সংখ্যা জোর, যেমন সূরা আন নিসা; সূরা সংখ্যা ৪ আয়াত সংখ্যা ১৭৬; এই চারটি দলের সূরাগুলোর সংখ্যাকে ছকে দেখানো হল;

 

 

 

১১৪ টি সূরা
১৩ বিজোর সংখ্যা তৈরী কারী সূরা
৬০ ৫৪
জোর সংখ্যার সূরা বিজোর সংখ্যার সূরা জোর সংখ্যার সূরা বিজোর সংখ্যার সূরা
৩০ ৩০ ২৭ ২৭

আমরা যদি কোন একটি সূরার আয়াত সংখ্যা পরিবর্তন করি সমগ্র হিসেবটি ভেঙে যাবে। যেমন সূরা ফাতিহাতে যদি আয়াত সংখ্যা হয় ৮; তাহলে ছকে এর অবস্থান পরিবর্তন হয়ে যাবে, সূরা ইমরান যদি ২ নং সূরা হয়ে যায় তবে গানিতিক সমন্বয় সম্পূর্ণ পরিবর্তীত হয়ে যাবে; ভেঙে পড়বে গাণিতিক সমন্বয়। আর এই বিষয়টি মহান আল্লাহ আমাদের দৃষ্টিতে তুলে ধরেছেন উপরে উদ্ধৃত ৮৯:৩ আয়াতে; তিনি আরও বর্ণনা করেছেন যে, এই পবিত্র গ্রন্থ লিপবদ্ধ খাতা,একদিকে গণিতের সমন্বয় অপরদিকে লিপিবদ্ধ খাতারূপে পরিচয় দান, এসব থেকে কি বলা যায়না যে পবিত্র কোরআন গাণিতিক ভাবে সমন্বিত; ৮৩ নং সূরা, সূরা আত-মুতাফীফ এর ৮, ৯ ও ২০ নং আয়াতে আল্লাহ বলছেন,

سِجِّينٌ مَا أَدْرَاكَ وَمَا

৮৩:৮ আপনিজানেন, সিজ্জীনকি?

مَّرْقُومٌ كِتَابٌ

৮৩:৯ এটালিপিবদ্ধখাতা।

 

عِلِّيِّينَ لَفِي الْأَبْرَارِ كِتَابَ إِنَّ كَلَّا

৮৩:১৮ কখনওনা, নিশ্চয়সৎলোকদেরআমলনামাআছেইল্লিয়্যীনে।

عِلِّيُّونَ مَا أَدْرَاكَ وَمَا

৮৩: ১৯আপনিজানেনইল্লিয়্যীনকি?

আমরা উপরের ছক থেকে পবিত্র কোরআনের সূরাগুলোকে দুটি ভাগে ভাগ করতে পারি; যথা ১. সদৃশ বা সমজাতীয় সূরা; ২.অসদৃশ বা ভিন্নজাতীয় সূরা;

সদৃশ সূরা বা সমজাতীয় সূরা সেই গুলো যারা একই প্রকৃতির যেমন,বিজোর সংখ্যা সূরা বিজোর সংখ্যা আয়াত ,বা, জোর সংখ্যা সূরা ও জোর সংখ্যা আয়াত। পবিত্র কোরআনে ৫৭ টি সদৃশ সূরা ও ৫৭ টি বিসদৃশ সূরা রয়েছে; নীচের ছকে আলাদা করে দেখানো হল;

 

১১৪ টি সূরা
সদৃশ সূরা অসদৃশ সূরা
৫৭ ৫৭
জোর সূরা সংখ্যা   জোর আয়াত সংখ্য বিজোর সূরা সংখ্যা বিজোর আয়াত সংখ্যা জোর সূরা সংখ্যা বিজোর আয়াত সংখ্যা বিজোর সূরা সংখ্যা জোর আয়াত সংখ্যা
৩০ ২৭ ৩০ ২৭

 

যেহেতু জোর বিজোর সূরা সংখ্যা ও আয়াত সংখ্যার যোগফল তাৎপর্যোময় সেহেতু জোর বিজোর সূরা সংখ্যা ও জোর বিজোর আয়াত সংখ্যা ও তাৎপর্যোময়,আর এই তাৎপর্যোই প্রমান করে যে, পবিত্র কোরআনের সূরা ও আয়াতের এই বিন্যাস করণ একমাত্র মহাপ্রঞ্জাময় মহান আল্লাহর পক্ষেই সম্ভব, কোন মানবের পক্ষে নয়।

আমরা দেখেছি পবিত্র কোরআনের সূরা সংখ্যাগুলি যোগ করলে মোট সংখ্যা দাঁড়ায় ৬৫৫৫; আর এই সংখ্যাটি ছকের বিজোর সংখ্যার যোগফলের সমান। পরস্পর এই সংখ্যাগুলো আমরা নীচের সূত্রটি দিয়ে যোগ করতে পারি;

সূত্রটি হল nx(n+1)/2

এই সূত্রের সাহায্যে আমরা কোরআনের সূরা সংখ্যাগুলোর যোগফল বের করতে পারি; আমরা জানি পবিত্র কোরআনে মোট সূরা সংখ্যা ১১৪ টি;সুতরা ১ থেকে ১১৪ অবদি সংখ্যাগুলোর যোগফল নিলেই আমাদের উদ্দীষ্ট সংখ্যাটি পাওয়া যাবে;

১+২+৩+৪+…………..+ (n-1)+n=n(n+1)d/২;

এখানে d পরস্পর দু’টি রাশির মধ্যে পার্থক্য;

পবিত্র কোরআনের ক্ষেত্রে n=১১৪;কারণ ১ থেকে ১১৪ অবদি মোট সংখ্যা ১১৪ টি; আবার প্রত্যেক জোরের মধ্যে পার্থক্য ১   (২-১=১ বা ৪-৩=১ ইত্যাদি); সুতরাং আমাদের উদ্দীষ্ট যোগফলটি দাঁড়ায়   n(n+1)d=১১৪(১১৪+১)১/২;

=১১৪ x১১৫/২=৬৫৫৫;

আমরা উপসংহারে কিছু চিত্তাকর্ষক তথ্য দেখবো,আমরা উপরের ছক থেকে হিসেব করে পাই,আয়াত ও সূরাসংখ্যার যোগফলের মধ্যে জোড় সংখ্যাগুলির যোগফলটিও জোড় সংখ্যা যা ৩৪৫০; আবার অনুরূপ বিজোড় সংখ্যাগুলোর যোগফলটিও বিজোড় যা ৩১০৫; এটি জোর ও হতে পারতো;কিন্তু মহান আল্লাহ এমন ভাবেই বিন্যাস করেছেন যে তা হয়নি।উদাহরণস্বরূপ আমরা পবিত্র কোরআনের ৩য় ১৭তম সূরাটি নেই; এখানে ৩য় সূরাতে আয়াত সংখ্যা ২০০;যোগফল ২০৩ একটি বিজোর সংখ্যা; আবার ১৭ তম সূরাতে আয়াত সংখ্যা ১১১ আয়াত; যোগফল ১২৮ একটি জোর সংখ্যা; সূরা দুইটির স্থান বিনিময় করলে প্রথমটির সংখ্যা হয় 217 আবার দ্বিতীয়টির সংখ্যা হয় ১১৪ একটি জোড় সংখ্যা; লক্ষ্য করুন যোগফলের জোড় বিজোরে কোন পরিবর্তন আসেনি কিন্ত, ছকের জোর সংখ্যাগুলোর সার্বিক যোগফল ৩৪৫০ এর জায়গায় হবে ৩৪৬৪; আবার বিজোর সংখ্যাগুলির যোগফল হবে ৩০৯১; এই পরীক্ষা থেকে পরীস্কার হয়ে যায় যে আমরা চাইলেই কোন সূরার অবস্থানকে পরিবর্তন করতে পারিনা।এগুলো মহান আল্লাহর স্বাধীন ইচ্ছায় অলৌকিক সজ্জায় সজ্জিত হয়েছে। আমরা যদি পবিত্র কোরআনকে দুইটি অংশে বিভক্ত করি ১ থেকে ৫৭ নং অবদি প্রথম ভাগে আর ৫৮ থেকে ১১৪ অবদি দ্বিতীয় ভাগে পড়ে; আমরা জানি ৫৭ নং সূরাটি সূরা হাদীদ, এখন আমরা যদি ১-৫৭ অবদি সূরা সংখ্যাগুলি যোগ করি তবে সংখ্যাটি দাঁড়ায়,

nx(n+1)/2 =৫৭(৫৭+১)/২=১৬৫৩; যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য অর্থাৎ ১৬৫৩=১৯ x৮৭;

আমরা জানি ৫৭ নং সূরাটিতে আয়াত সংখ্যা ২৯; এই সংখ্যাটি দিয়ে সূরা সংখ্যাকে গুণ করলে গুণফল হয় ৫৭ x২৯=১৬৫৩ ঠিক ৫৭ টি সূরার সূরা সংখ্যাগুলোর যোগফল; এটি দেখেও কি কউ বলতে পারেন যে হিসেবটি গণিতের মারপ্যাচে আপনা আপনি মিলে গেছে; এখন সূরা হাদীদ এর একটি আয়াত কমিয়ে দিলেও সব হিসেব ভেঙে পড়বে।বলুন দেখি কে নবীজীকে বলে দিয়েছিল সূরা হাদীদের আয়াত ২৯ টি করতে? এখানে একটি বিষয় উল্যেখযোগ্য যে, আমাদের দেশের ওলামাবৃন্দ ইতিহাসের আলোকে বলে থাকেন যে পবিত্র কোরআনকে বর্তমান সজ্জায় সাজিয়েছেন খলিফা হযরত ওসমান (রাঃ); আমি ব্যক্তিগত ভাবেও তাদের সাথে আলাপ করে এই তত্ত্বই পেয়েছি; যদি এ তথ্যকে সঠিক ধরে নেওয়া হয় তবে আমাদের উপরউক্ত হিসেবের ভিত্তিতে যে সকল প্রশ্ন উত্থিত হয় তার একটিরও জবাব পাওয়া কঠিণ।এ ক্ষেত্রে আমাদেরকে যদি নীরুপায় হয়ে মেনে নিতেই হয় যে,পবিত্র কোরআনের এই লিখিত রূপ দিয়েছেন হযরত ওসমান (রাঃ); তাহলে আমাদের আরও মেনে নিতে হয় যে স্বয়ং খলিফা এই হিসেবগুলি কষে কোরআনের এই সজ্জা দিয়েছেন তথা সূরা হাদীদে ২৯ টি আয়াতের সঙ্কুলান করেছেন।সম্ভবত এমনিতর ঐতিহাসিক ধারনা থেকে উত্থিত চেতনায় উদ্ভুদ্ধ হয়ে আমাদের উপমহাদেশের মাননীয় ওলামা বৃন্দ সূরা ফাতিহার প্রথম আয়াত বাসমালাহ কে প্রথম আয়াতের স্থান থেকে বিচ্যুত করে দ্বিতীয় আয়াতকে প্রথম আয়াত স্থির করেছেন।(আমাদের দেশীয় ছাপা কোরআন শরীফ দ্রষ্টব্য)।আমরা জানিনা মহান আল্লাহর নির্দারণ কোনটি,তবে পবিত্র কোরআনে প্রাপ্ত নানা নিদর্শন ও গাণিতিক সমন্বয় বলছে বাসমালাই সুরা ফাতিহার তথা পবিত্র কোরআনের প্রথম আয়াত।

পরীক্ষায় আরও দেখা গেছে যে, পবিত্র কোরআনের দুই ভাগের প্রথম ভাগে বিজোর সূরাসংখ্যায় ২৯টি সূরা আর জোর সূরাসংখ্যায় ২৮টি সূরা রয়েছে। দ্বিতীয় ভাগে বিজোর সূরা সংখ্যায় রয়েছে ২৮ টি সূরা আর জোর সূরাসংখ্যায় আছে ২৯ টি। অবশ্য এটি কোন বিষ্মকর বিষয় নয় এটি সংখ্যার গাণিতিক বৈশিষ্ট। তথাপি এটি চিত্তাকর্ষক যে, দুই ভাগে প্রথম ভাগের জোর বিজোর সংখার সূরাগুলির সংখ্যা দ্বিতীয় ভাগে ঠিক উলোটা। এই বিষয়টি গাণিতিক কোন বৈশীষ্ট নয় এইট নিভর্ভরশীল মোট সূরা মংখ্যা নির্ধারণের উপর; যা একমাত্র মহান আল্লাহর কর্তৃত্বে নির্ধারীত।

 

নীচের ছকটি অবলোকন করুন;

১১৪ টি সূরা
কোরআনের ১ম অর্ধেক সূরা কোরআনের ২য় অর্ধেক সূরা
৫৭ ৫৭
বিজোর সূরা সংখ্যার   মোট সূরা জোর সূরা সংখ্যার মোট সূরা জোর সূরা সংখ্যার মোট সূরা বিজোর সূরা সংখ্যার মোট সূরা
২৯ ২৮ ২৯ ২৮

 

সদৃশ্য সূরা অসদৃশ্য সূরা অসদৃশ্য সূরা সদৃশ্য সূরা
২৯ ২৮ ২৯ ২৮

পবিত্র কোরআনের এই জোড় বিজোর সূরা সংখ্যার পরীক্ষায় কি মনে হয়না যে,পবিত্রকোরআনের অলৌকিকতা প্রমানে এই সজ্জাটিই যথেষ্ট! আর এটি স্বর্গীয় পদ্ধতীতে স্বয়ং এই মহাবিবিশ্বের স্রষ্টা সাজিয়েছেন।আর এই সজ্জার প্রতিটি পড়তে পড়তে এটে দিয়েছেন বিষ্ময়কর গাণিতিক সমন্বয় যা পবিত্র কোরআনর অক্ষুন্নতাকে রক্ষা করে এসেছে,করবে চিরদিন। কোন মানুষ যমন এরমত তৈরী করতে পারবেনা তেমনি পারবেনা একে কলুষিত করত; চোখের সামনে দেখতে পাবে শুধু তার প্রতীরক্ষা জালটিকে।

 

সূত্র-প্রবন্দটি CANER TASLAMAN এর বিখ্যাত গ্রন্থ ‘THE QURAN UNCHALLENGEABLE MIRACLE’ এর সহযোগিতায় প্রণিত।

 

আব্দুল আজিজ খন্দকার

২৩.০৫.২০১৪

 

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান